পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ মেনাজ আলী। বয়স ৭০ ছুঁই ছুঁই। স্ত্রী থেকেও নেই। একমাত্র মেয়ে কুলসুমকে নিয়ে পরিত্যক্ত জলাশয়সংলগ্ন ভিটায় ঝুপড়ি বানিয়ে বাস করেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেয়ে অনেকের ভাগ্য বদলালেও এখনো তিনি কোনো ঘর পাননি। সংশ্লিষ্টরা তাকে ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেননি।
পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের তেলীখালী গ্রামে মহাসড়কের পাশে হতদরিদ্র মেনাজ গাজীর বসত।
সরেজমিন দেখা গেছে, পরিত্যক্ত জলাশয়ের পাশে একচালার নড়বড়ে ঘরটি যেন একটু ঝড়ো হওয়া হলেই ভেঙে যাবে। বৃষ্টির সময় ভাঙা চাল দিয়ে পানি পড়ে। বর্ষাকালে কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায় ঘরের ভেতর। মেঝেতে পলিথিন বিছিয়ে থাকতে হয় বাবা-মেয়েকে।
সহজ-সরল মেনাজের জীবন চলে ভিক্ষাবৃত্তি করে। মা হারা কুলসুমের বয়স আট বছর। পার্শ্ববর্তী স্কুলে পড়াশোনা করে সে।
কুলসুম জানায়, তার মা শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি অনেক আগেই তাদের ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছেন। কিন্তু সে তার বাবার সঙ্গেই থেকে যায়। বাড়ির পাশের একটি পাঠশালায় সে পড়ালেখা করে। ভিক্ষাবৃত্তি করে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটে তাদের।
বৃদ্ধ মেনাজ গাজী বলেন, জমি থাকলেও ঘর তোলার সামর্থ্য নেই। সবাই শুধু আমাগো ছবি তোলে, ঘর দেবে বলে কথা দেয়, কিন্তু কেউ ঘর দিল না। কার কাছে গেলে ঘর পাব তাও জানি না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিব বর্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ জেলায় ৬ হাজার ৫২৮টি ঘর বরাদ্দ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর মধ্য সদর উপজেলায় বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ২৫২টি।
এ প্রসঙ্গে বদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান তানজিন নাহার সোনিয়া বলেন, আমি কিছুদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। আগামীতে ঘর বরাদ্দ আসলে তার জন্য ব্যবস্থা করব।
পটুয়াখালী সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিগত দিনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় মুজিবর্ষের ঘর বরাদ্দ হয়েছে। হয় তো কোনো কারণে তার নাম বাদ পড়েছে। জমি আছে ঘর নাই- এটা ‘খ শ্রেণির’ আওতাভুক্ত। অচিরেই এ প্রকল্প আসবে। তখন তাকে অর্ন্তভুক্ত করা হবে।