কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি : এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিল পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান। কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্য এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে খাল-বিল, হাওড়-বাওড়ে পানি না থাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে।চাহিদা মেটাতে এখন বিদেশি কার্প জাতীয় মাছে বাজার দখল করেছে।
নদীতে পানি না থাকায় আর খাল-বিল লিজ দেওয়ায় জেলার মৎস্যজীবীরাও বদলে ফেলেছেন তাদের পেশা। নদীর নাব্যতা হারিয়ে শুকিয়ে যাওয়া এবং সরকারি খাল-বিল লিজ দেওয়ায় পেশা বদলিয়েছেন জেলার নিন্ম আয়ের মৎস্যজীবীরা।
লিজ গ্রহণকারী মৎস্যচাষিরা খাল বিলের দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরে বেশি মুনাফার আশায় কার্প জাতীয় মাছ চাষ করছেন। নদী শুকিয়ে যাওয়ায়, খাল-বিল থেকে দেশি মাছ নির্বিচারে নিধন করায় প্রজনন হচ্ছে না দেশীয় প্রজাতির মাছের।
ফলে দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এ প্রজাতির মাছ। কয়েক বছর আগে বাইন, ভেদা, গজাড়, চেলা, মলা, খোলসে, কই, চিংড়ি, চিতল, সিং, মাগুর, বোয়াল, ডাঁড়কি, ছলং- এ মাছগুলো নদ-নদী, খাল-বিল, বাওড় ও পুকুরে দেখা যেত।
বর্তমানে এ মাছগুলো বিলুপ্ত প্রায়। বর্ষা মৌসুমে নিম্নবিত্তের মানুষেরা এ মাছগুলো ধরে নিজের চাহিদা মেটানোসহ বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো।
যে মাছ কয়েক বছর আগেও কেজি প্রতি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হত তা এখন কিনতে হচ্ছে ৬শ’ টাকা থেকে ৮শ’ টাকায়। মৎস্যজীবী কামাল হালদার বলেন, আগে নদ-নদী, খাল-বিলে দেশীয় মাছ ধরে খেতাম।
এখন সরকারি খাল-বিল বৈধ-অবৈধভাবে লিজ নিয়ে কার্প জাতীয় মাচ চাষ করতে সার-বিষ দেওয়া হচ্ছে। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছ মরে যাচ্ছে। মৎস্য চাষি রঞ্জনধর, জানান, পানি না থাকায় দেশি মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
আমরা কার্প জাতীয় মাছ চাষ করে বাজারের চাহিদা মেটাচ্ছি। সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দিলে এ বিলুপ্ত প্রায় মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব হত।