পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর বাউফলে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। বুধবার উপজেলার পাবলিক মাঠে অনুষ্ঠিত প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলার মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাদের বিরুদ্ধে সময়োপযোগী চিকিৎসাসেবা না দেওয়াসহ শত অভিযোগ করেন খামারিরা। এ সময় মঞ্চে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন ।
জানা গেছে, বুধবার পাবলিক মাঠে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২২ এর উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কয়েকজন খামারি।
খামারিরা জানায়, প্রতিটি খামার করতে তাদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রম ও প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়। খামারে কোনো রোগের উপদ্রব হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে টিকা ছাড়া আর কোনো ওষুধ কিংবা চিকিৎসাসেবা সময়মতো পান না তারা। স্বেচ্ছায় কোনো কর্মকর্তা খামার পরিদর্শন করেন না। প্রয়োজনে একাধিকবার ফোন করলেও একবার আসেন না। সেক্ষেত্রে প্রতিবার ভিজিট দিতে হয় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।
দাশপাড়া ইউনিয়নের উন্নত প্রজাতির ছাগল পালনকারী অলিউর রহমান নামের এক খামারি অভিযোগ করে বলেন, ইতোমধ্যে আমার খামারের বেশ কয়েকটি ছাগল মারা গেছে। কিছুদিন আগে আমার একটি উন্নত জাতের ছাগল অসুস্থ হয়। বিকাল ৫টার দিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পরের দিন সকালে আসবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু রাতে ছাগলটি মারা যায়। যার বাজারমূল্য ছিল ৭০ হাজার টাকা।
সবুজ তালুকদার নামের অপর এক কবুতর খামারি অভিযোগ করে বলেন, প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে আমার একটি কবুতরের খামার রয়েছে। প্রতি ২-১ দিন পরপর খামারের কবুতর মারা যাচ্ছে। প্রতিটি কবুতরের বাজারমূল্য ৪-৫ হাজার টাকা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে মৌখিকভাবে একাধিকবার জানালেও কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এখন পর্যন্ত খামারটি পরিদর্শন করেননি।
বিভিন্ন সময় সমস্যার কথা তাদের বললে মৌখিকভাবে সমাধান দিয়েছেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে পশু মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করেন না তারা। এছাড়া গৃহপালিত বা খামারের গাভি অসুস্থ হলে নির্ধারিত অংকের ভিজিট দিয়ে বাড়ি নিতে হয় উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের। সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ প্রয়োগ করেও তারা টাকা আদায় করেন। খামারিদের এমন অভিযোগ শুনে উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
উপজেলা প্রণিসম্পদ কর্মকর্তা শুভ মজুমদার বলেন, প্রাণিসম্পদের ক্ষেত্রে জরুরি সেবা (রাত্রিকালীন) না থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে আমরা খামারিদের আশানুরূপ সেবা দিতে পারছি না। তারপরও এখন থেকে খামারিদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।