ঢাকা (দোহার)প্রতিনিধিঃ ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে সেতুর ওপর,সড়ক ও কৃষি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে ড্রেজারের পাইপ লাইন। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দোহারের কুসুমহাটি ইউনিয়নে ফজলে রাব্বি দোহার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) একদিন অভিযান চালিয়ে তিনটি ড্রেজার এর পাইপ ধ্বংস করে দেয়।
তবে এ ধরনের অভিযান মাহমুদপুর ইউনিয়নে না চালানোর কারনে পুরো ইউনিয়ন জুড়ে রাস্তার উপরে রয়েছে বেশ কিছু ড্রেজার এর পাইপ। রাস্তায় দখল করে পাইপ নেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উপেক্ষা করে সেতু, কৃষিজমি ও রাস্তায় উপর পাইপ নিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
রবিবার (২৮ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের হরিচন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের সড়কের ওপর দিয়ে ড্রেজারের পাইপ লাইন টানা হয়েছে। সড়ক ছাড়া এ পাইপ নেওয়া
হয়েছে সেতুর পাশ দিয়ে। সেতুর পাশ দিয়ে পাইপ নেওয়ায় সেতুটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
অন্য দিকে ধুলুখার ব্রিজেরও একই অবস্থা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ এই ব্রিজটা এমনই ভেঙে আছে। তার মধ্যে ড্রেজার ব্যবসাইরা তাদের ড্রেজার পাইপ ব্রিজের পাশ দিয়ে বেঁধে নিয়ে বালু ভরছে বিভিন্ন স্থানে, এতে আরো ঝুঁকির মধ্যে পরেছে ব্রিজটি।
এসব জায়গায় পাইপের ওপর মাটি ফেলে কয়েক ফুট উঁচু করা হয়েছে। এতে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, দোহারে যারা ড্রেজার চালায় তারা প্রশাসনের থেকে শক্তিশালী। এর কারণ হল তারা একদিক থেকে পাইপ ধ্বংস করে দিয়ে যায় অন্য দিক দিয়ে বা কিছু সময় পার হলেই তারা আগের মত সেই অবস্থায় ফিরে যায়। এ ভাবে চোর পুলিশ খেলে তারা। এই চোর পুলিশ খেলা থামিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আল আমিন হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় যে ভবে ড্রেজারের পাইপে ছেয়ে গিয়েছে তা দেখে এখন আর মনে হয় না যে এটা আর আমাদের ইউনিয়ন। মাহমুদপুর গ্রামে ধুলুখার ব্রিজ নামে পরিচিত যে ব্রিজটি সে ব্রিজ দিয়ে তিনটি পাইপ নিয়ে ছিল ড্রেজার ব্যবসাইরা। এ বিষয় নিয়ে আমি এলাকাবাসী পক্ষ থেকে দোহার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি ২৫/১১/২১ তারিখে।
এ বিষয়ে আরেক জন ঐ স্থানের বাসিন্দা শেখ আবুল বলেন, এই ব্রিজ দিয়ে যখন পাইপ নেয় তখন আমরা এলাকাবাসীরা বাঁধা দেই কিন্তু তারা কোন কথা শুনে না। তারা প্রভাবশালী বলে কেউই আর কিছু করতে পারে নাই। মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশ দিয়ে পাইপ নেওয়া হয়েছে রাস্তা উপর দিয়ে এবিষয়ে মাহমুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই পাইপ নিয়েছে সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই ইয়াকুব আলী। আমি বাঁধা দিয়েছি তারা শুনে নেই। তরপর আমি তাকে নিষেধ করেছি কিন্তু সে তাও শুনে নেই।
রাস্তার উপর দিয়ে যে ড্রেজার পাইপ নিয়েছে সে বিষয় প্রশাসনের কাছে থেকে কি কোন অনুমতি নিয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে ড্রজার ব্যবসায়ী এডভোকেট জিন্নত চোকদার বলেন, আমাদের ড্রেজার ব্যবসায়ী সমিতির আছে, সভাপতি বশির উদ্দিন এবং সেক্রেটারি মাহাবুব খান, আপনি তাদের সাথে কথা বলেন।
তখন তাকে আবার প্রশ্ন করা হলে, তখন তিনি উত্তরে বলেন আমি যে পাইপ নিয়েছি তাতে কোন জনগণের সমস্যা হচ্ছে না। আর আপনারা ভাল কিছু নিয়ে নিউজ করেন এগুলো নিয়ে নিউজ করার কি দরকার? ড্রেজারের পাইপের বিষয় নিয়ে দোহার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ এফএম ফিরোজ মাহমুদ নাঈমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা অতিদ্রুত এ বিষয় নিয়ে অভিযান পরিচালনা করবো।