দোহার প্রতিনিধি: জয়পাড়া থেকে রাজধানীর উদ্দেশ্যে বাসে কিংবা সিএনজিতে রওনা হলে যেতে হয় দোহারের আড়িয়াল বিলের (নিকড়া চক) উপর দিয়ে। ঢাকায় যাওয়ার সময় আড়িয়াল বিল নামে কফিশপ পরবে হাতের ডানে আর এই কফি শপের পিছনেই বিস্তীর্ণ আড়িয়াল বিলে স্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে হাঁসের খামার। বিলের পানিতে দলবদ্ধভাবে অসংখ্য হাঁসের দল আহার খুঁজে বেড়াচ্ছে।
আড়িয়াল বিলসংলগ্ন সড়কের ডান পাশে কফিশপের পিছনেই একটি উঁচু শুকনা জমিতে এসব হাঁস লালন-পালনের জন্য টিন ও বাঁশ দিয়ে একচালা শেড তৈরি করা হয়েছে। খামার দেখভালের জন্য রাখা হয়েছে জলবল। বিখ্যাত আড়িয়াল বিল এলাকার ঢাকার দোহার উপজেলার নিকড়া চক (আড়িয়াল বিল) কফিশপের পিছনে এমনই একটি হাঁসের খামারের সন্ধান মিলেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা নিকড়া গ্রামের বাসিন্দা রতন বেপারি নামে এক ব্যক্তি বানিজ্যিক ভাবে গড়ে তুলেছেন আড়িয়াল বিলের প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁসের খামারটি। তিনি স্থায়ীভাবে একটি শেডে খামারটি গড়ে তুলেন। প্রায় বারো হাজার হাঁস লালন-পালন করা হচ্ছে এখানে।
সারা বছরের জন্য হাঁসের ডিম উৎপাদণের লক্ষ্যে খামারটি গড়ে তোলা হয়। খামারের দায়িত্ব থাকা মোঃ কাজল মিয়া বলেন, খামার থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ ডিম সংগ্রহ হয়। সপ্তাহে দুদিন পাইকাররা এখানে এসে এসব ডিম বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
মাসিক বেতনে হাঁস লালন-পালন করাসহ খামারের যাবতীয় কাজকর্ম করছেন তারা। তিনি আরো বলেন,তবে এখন হাঁসের ডিম পাড়া বন্ধ রয়েছে। আর আমরা বর্ষার সময় এক টাইম হাঁসকে হাওয়া ধান খেতে দিতে হয়। এই হাঁসের খামারের পাশাপাশি কারফু, শৈল, কাতল, ভেটকা ইত্যাদি মাছও চাষ করা হচ্ছে এই খামারে আর এই মাছ গুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৯ টায় হাঁস ছেড়ে দিলে বিকাল ৫ টায় সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আড়িয়াল বিলের উন্মুক্ত জলাশয়ে এসব হাঁস শামুক, ঝিনুক ও ছোট মাছ শিকার করে বেড়ায়। এতে হাঁসের ফিডজাতীয় খাবার ক্রয়ে খামারির ব্যয়ের পরিমাণ অনেকাংশে কম হচ্ছে।
আড়িয়াল বিলের প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁসের খামার করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন খামারি। খামার থেকে প্রতি ১০০ পিস হাঁসের ডিম পাইকারের কাছে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে হাঁসের ডিমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই হাঁস লালন-পালন করা হচ্ছে খামারে।
হাঁসের খামার মালিক রতন বেপারি বলেন, আমি এখন মোটমুটি ভাবে লাভবান আছি। তবে যখন হাঁস বেঁধে রেখে খাওয়াতে হয় সে সময় লাভ কম হয়। আমার এখানে অনেকেই আসে আমার হাঁসের খামার দেখে, খামার করতে কিন্তু আমি তাদেরকে বলি চকে বা বড় জায়গা না থাকলে এটা করা সম্ভব হবে না।
এই হাঁসের খামারে অনেক টাকা খরচ হয় সে জন্য চকে হলে হাস পালন করলে কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে বলে আমি মনে করি। হাস যখন ডিম দেয় তখন পাইকাররা আমার এই জয়গা থেকে এসে ডিম ক্রয় করে নিয়ে যায় পাইকারি বাজার দরে। হাঁসের পাশাপাশি আমি সবজি ও মাছ চাষ করি মহিষ ও ছিল ২ টা কিন্তু এখন নেই বিক্রি করে দিয়েছি।