বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলীতে মোমেপাড়া গ্রামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে রাখাইনদের শ্মশান ও সরকারী আবাসনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় দেড় একর জমি দখলে নিতে ওই প্রভাবশালী বৃহস্পতিবার থেকে ভেক্যু দিয়ে মাটি কেটে সীমানা নির্মান করেছে। রাখাইন সম্প্রদায় তাদের পূর্বপুরুষদের শ্মাশান দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে দখলমুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন প্রশাসনের নিকট।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে বড়বগী ইউনিয়নের মোমেপাড়া গ্রামের মোঃ নূরমহম্মদ হাওলাদারের ছেলে প্রভাবশালী নজরুল ইসলাম রাখাইনদের শত বছরের পুরানো শ্মাশান ও এর পাশে অবস্থিত আবাসনের পরিত্যক্ত প্রায় দেড় একর জমি বন্দোবস্ত নেওয়ার কথা দাবী করে দখল করেন। ওই দখলীয় জমিতে নজরুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভেক্যু দিয়ে মাটি কেটে সীমানা নির্ধারন করেন। ভেক্যু দিয়ে মাটি কাটার সময় মাটির নীচ থেকে রাখাইনদের শ্মানের ইট বেড় হতে দেখা গেছে।
স্থানীয় কামাল হাওলাদার জানান, শিশু বয়সে আমরা ওই জমিতে রাখাইনদের শ্মশান দেখেছি। আর কয়েক বছর পূর্বেও তার পাশে একটি সরকারি আবাসন ছিল লোকজন না থাকায় রড টিন সব চুরি হয়ে যাওয়ায় এখন শুধু খুটি গুলো দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখন রাখাইনদের শ্মশান ও সরকারি আবাসনের জমি দখলের জন্য ভেক্যু দিয়ে মাটি কেটেছে নজরুল ইসলাম।
মোমেপাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ জয়নাল ফকির বলেন, এই পাড়ায় শতাধিক মগের চিতা (রাখাইন দের শ্মশান) ছিল। আর ২০০৭ সালের বন্যয় আবাসনটি ধংস হলে ওখানে কেউ না থাকায় মালামাল চুরি হওয়ায় এখন আর কেউ বসবাস করে না। তিনি আরো বলেন, বৃটিশ সরকারের সময় এখানে রাখাইনরা বসবাস করলেও এখন আর কোন রাখাইন এখানে বসবাস করেন না। কিন্তু এখানে তাদের চিতা (শ্মশান) ছিলো এখন সেই চিতা (শ্মশান) নজরুল ক্ষমতার জোরে দখল করেছে।
তালতলী উপজেলা রাখাইন সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মি.মংচিন থান জানান, মোমেপাড়ায় এক সময় রাখাইন সম্প্রদায়ের কয়েকশ পরিবারের বসবাস ছিল। ওই পাড়াটি আমাদের সম্প্রদায়ের নামেই নামকরন। কিন্তু কালের বিবর্তনে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ¡াস এবং অনেক মগ মারা যাওয়ায় এবং জীবিতদের অনেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি চলে যাওয়ায় শ্মশান গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার মত কেউ না থাকায় ভূমিদস্যুরা এগুলো এখন দখল করছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের শ্মশান আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
অভিযুক্ত দখলদার নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, এই জমি আমি তালতলী উপজেলা ভূমি অফিস থেকে আমি বন্দোবস্ত নিয়েছি। আর সরকারী আবাসনের জমি আমি দখল করিনি।
বড়বগী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন জানান, দখলের খবর পেয়েছি। সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাওছার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, রবিবার (২০ মার্চ) সকালে স্থানীয় তহশিলদার ও বন বিভাগের লোকজনকে সরেজমিনে পাঠানো হবে। ওটা যদি সরকারি জমি অথবা রাখাইনদের শ্মশান হয় তাহলে অবৈধ দখলমুক্ত করতে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হবে। #