পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে মাছধরা জালে জড়ানো অসুস্থ হয়ে পড়া ৭টি রাজ কাঁকড়াকে উদ্ধার শেষে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইকো-ফিসের একদল গবেষক রাজ কাঁকড়াগুলো অবমুক্ত করেন। ডাইনোসরের আগেও রাজ কাঁকড়ার অস্তিত্ব ছিল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
স্থানীয় জেলেরা জানান, প্রতি বছরের মতো চলতি মৌসুমের সপ্তাহজুড়ে কুয়াকাটা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ কিছু রাজ কাঁকড়ার দেখা মিলছে। পটুয়াখালী জেলা ইউএস-এইড/ইকো-ফিস ২, ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশ প্রকল্পের সহকারী গবেষক মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, একটি গবেষণার কাজে সকালে কুয়াকাটা জিরোপয়েন্ট থেকে গঙ্গামতির দিকে যাওয়ার পথে ছেড়া জালে আটকেপড়া অসুস্থ ৭টি রাজ কাঁকড়া উদ্ধার করি।
উদ্ধারকালে তাদের শরীর থেকে নীলরঙের রক্ত ঝরছিল। এদের পরিচর্যা শেষে দুপুরে কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন সৈকত থেকে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে। একই গবেষণা সংস্থার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি যুগান্তরকে বলেন, যে রাজ কাঁকড়াগুলো উদ্ধার করেছি এগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম কার্সিনসকর্পিয়াস রোটান্ডিকওডা।
এদেরকে জীবন্ত জীবাশ্মও বলা হয়। উদ্ধারকৃত কাঁকড়াগুলোর মধ্যে ১৩ ইঞ্চি সাইজের এবং যার ওজন ছিল ১ দশমিক ২৮ পাউন্ড। তার মতে, এগুলো ৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে। এসবের গায়ের রং হালকা সবুজ। বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ডিম দেয়ার জন্য সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকায় ভেজা বালু ও কাদামাটিতে এরা চলে আসে।
এ গবেষক আরও জানান, এটি ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য ব্যাধির প্রতিষেধক তৈরিতেও ব্যবহার হয়ে থাকে। উদ্ধারকৃত রাজ কাঁকড়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রকাশ চাকমা জানান, বিশ্বে মোট ৪ প্রজাতির রাজ কাঁকড়ার দেখা মিললেও আজকে যেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে এই প্রজাতির রাজ কাঁকড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যায়।
এদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলার কারণ হচ্ছে- ৪৪ কোটি ৫০ লাখ বছর আগেও পৃথিবীতে এই কাঁকড়ার অস্তিত্ব ছিল। ডাইনোসরের চেয়ে প্রায় ২০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এসেছে রাজ কাঁকড়া বা লিমুলাস। তাই এই জলজ প্রাণীটি বিজ্ঞানীদের কাছে আজও বিস্ময়।