মিফতাউল আলম দেশের তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলেও মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।
মিফতাউল আলম দেশের তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলেও মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) প্রকৌশল গুচ্ছের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে মেফতাউল সম্মিলিত মেধাতালিকায় তৃতীয় হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এই ভর্তি পরীক্ষায় সমন্বিতভাবে ‘ক’ গ্রুপে ২২ হাজার ৬১০ জন এবং ‘খ’ গ্রুপে ৩ হাজার ৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মেফতাউল সম্মিলিত মেধাতালিকায় তৃতীয় হন। ফলাফলে ক গ্রুপে ১৪ হাজার ৯৮৯ জন এবং খ গ্রুপে ১ হাজার ৬৫৬ জন তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
এর আগে মেফতাউল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিট এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম এবং মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় ৫৯তম হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৪ হাজার ৫০৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১৭ দশমিক ৭৫ নম্বর (মোট নম্বর ১২০) পেয়ে প্রথম হয়েছেন তিনি।
মেফতাউল আলম বলেন, ‘তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফলাফল করতে পারিনি। এখন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছি। এ সপ্তাহে ফলাফল প্রকাশের কথা রয়েছে। বুয়েটে ভালো করতে পারলে সেখানেই ভর্তি হব।’
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের দাড়িদহ গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত এনজিও কর্মকর্তা খোরশেদ আলম এবং গৃহিণী মুনজিলা আলমের বড় ছেলে মেফতাউল আলম। মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করেন বগুড়া শহরের রহমাননগর এলাকায় ভাড়া বাসায়। সেখান থেকেই এ বছর বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি।
বাবার চাকরির সুবাদে প্রাথমিকের গণ্ডি পর্যন্ত কেটেছে দেশের বিভিন্ন শহরে। শৈশব থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে মাধ্যমিকে ভর্তি হন বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজে। ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ২৫২ থেকে রোল হয় ২০। সপ্তম শ্রেণিতে ক্লাসের সেকেন্ড বয় হন। অষ্টম শ্রেণিতে ক্লাসের সেরা হন। এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি হন সরকারি আজিজুল হক কলেজে। এইচএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পান।
চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন বাদ দিয়ে এখন পদার্থবিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মেফতাউল। মেফতাউল বলেন, ‘সাফল্যের পেছনে মায়ের পরিশ্রম আর বাবার অনুপ্রেরণা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। আর মা-বাবা আমাকে পড়াশোনার ব্যাপারে স্বাধীনতা দিয়েছেন।
চিকিৎসক-প্রকৌশলী হতেই হবে, এমনটা তাঁরা চাপিয়ে দেননি। তাঁদের স্বপ্ন ছিল মেডিকেলে পড়াশোনা করে চিকিৎসক হই। কিন্তু এখন আমার স্বপ্ন পদার্থবিজ্ঞানী হওয়ার। সেই ইচ্ছাতে তাঁরা বাদ সাধেনি।’
সূত্রঃ নিউজ গার্ডিয়ান/ এমএ